নিজস্ব প্রতিনিধি, রাহাদ হোসেনঃ আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অতি সন্নিকটে। ঢাকা-৫ সংসদীয় আসনে জনপ্রিয় এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব হাবিবুর রহমান মোল্লার মৃত্যুর পর উপনির্বাচনে প্রার্থী ছিল প্রায় ২০ জনের অধিক।
কিন্তু জনপ্রিয়তার দিক থেকে তৃণমূল আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের আসার সঞ্চার হিসেবে শীর্ষে সর্বসময় এগিয়েছিলেন ঢাকা-০৫ এমপি তৈরীর কারিগর, সাবেক ডেমরা থানা আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক, যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগ সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং ঢাকা-৫ সংসদীয় আসন ১৪ দলের সমন্বয়ক হারুনর রশীদ মুন্না।
হারুনর রশীদ মুন্নাকে ঢাকা-৫ সংসদীয় আসনের তৃণমূল আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা কেন এমপি হিসেবে চায় এ ব্যাপারে প্রতিবেদক হারুনর রশিদ মুন্নার রাজনৈতিক জীবনের গল্পের তথ্য অনুসন্ধানের মাধ্যমে জানতে পারেন,
মুন্সিগন্জ জেলার মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের অন্তর্গত মাকহাটি গ্রামের ঐতিহ্যবাহী শিকদার বাড়িতে (হারুনর রশীদ মুন্নার নানা বাড়ী) সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে হারুনর রশীদ মু্ন্না জন্ম গ্রহন করেন।
হারুনর রশীদ মুন্নার পিতা মকবুল হোসেন ব্যাপারী এবং মাতা জহুরা হিরন বেগম। জ্যেষ্ঠ সন্তান হারুনর রশীদ মু্ন্না পরিবার থেকেই মুজিব আদর্শের শিক্ষা গ্রহন করেন।
তার পিতা মকবুল হোসেন ব্যাপারী মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত একজন মুজিব আদর্শের সৈনিক হিসেবে সমাদৃত ছিলেন এবং মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হিসেবে দায়িত্বরত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
হারুনর রশীদ মুন্না ১৯৮৭ সালে মুন্সিগঞ্জ হরগঙ্গা কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অর্জনের জন্য ভর্তি হয়ে জাতির পিতার আদর্শকে বুকে লালন করে জাতির পিতার নিজ হাতে গড়া সংগঠন, শিক্ষা, শান্তি, প্রগতির পতাকাবাহী সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, হরগঙ্গা কলেজ শাখার মাধ্যমে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন।
স্বৈরাচারী এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহনের মাধ্যমে জীবনের প্রথম আন্দোলনে অংশগ্রহন করেন, তারপর ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের তৎকালীন নেতৃবৃন্দ মারুফ – মতি এর নেতৃত্বে ঢাকায় ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন।
১৯৯০ সালের ১৩ই অক্টোবর, ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ডাকে হরতাল চলাকালীন সময়ে হারুনর রশীদ মুন্না গ্রেফতার হন এবং গ্রেফতারের পর তাকে ডেমরা থানা থেকে জেলে প্রেরণ করা হয়। তারপর আইনের সহায়তায় জীবনের প্রথম কারাভোগ শেষ করে ১৯ দিন পর জেল থেকে মুক্তি পান।
১৯৯০ সালের ১২ই ডিসেম্বর এরশাদ সরকারের পদত্যাগের পর যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তায় আওয়ামী লীগের পক্ষে সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সেই সমাবেশে ফ্রিডম পার্টির নেতৃত্বে হামলা করা হয় এবং স্টেজ ভাঙ্গচুর করা হয়। অতর্কিত হামলার কারণে সেই সময়ে সমাবেশ পন্ড হয় এবং অনেক নেতাকর্মী সহ হারুনর রশীদ মুন্না গুরুতর আহত হন।
এরশাদ সরকার পতনের পর ১৯৯১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৎকালীন ঢাকা-০৪ আসনের জোটের প্রার্থী সাইফুদ্দিন মানিকের পক্ষে তৎকালীন মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা সফর আলী সাহেবের নেতৃত্বে নির্বাচন পরিচালনা করা হয় এবং উক্ত নির্বাচনে হারুনর রশীদ মুন্না ধোলাই-পাড় উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রধান সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৯২ সালের ২৬শে মার্চ শহীদ জননী জাহানারা ইমামের গণআদালতের আন্দোলনে হারুনর রশীদ মুন্না এবং তৎকালীন ৫৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং বর্তমান ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কালাম আজাদ সহ আরো অনেকেই পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন। সেদিন রাতে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া (বীর বিক্রম) এর প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় উনারা সকলে থানা থেকে মুক্তি পান।
১৯৯২ সালের ৬ই ডিসেম্বর বাবরী মসজিদ ভাঙ্গার প্রতিবাদে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ডাকা হরতাল চলাকালীন সময়ে হরতাল সফলের লক্ষ্যে পোস্তগোলা-জুরাইন-ধোলাইপাড় হয়ে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী সহ মিছিল নিয়ে যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তায় আসার পর বিএনপি-জামাত-ফ্রিডম পার্টির যৌথ হামলায় হারুনর রশীদ মুন্না সহ অনেক নেতাকর্মী গুরুতর আহত হন। অচেতন হারুনর রশীদ মুন্নাকে সেখানে উপস্থিত দমকল বাহিনীর কর্মীদের সহযোগিতায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ৯ই ডিসেম্বর তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এবং তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান সাহেব হারুনর রশীদ মুন্নাকে দেখতে আসেন এবং উনার উন্নত চিকিৎসার জন্য তৎকালীন বিএমএ এর সাধারণ সম্পাদক ডাঃ মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনকে হারুনর রশীদ মুন্নার সুচিকিৎসার জন্য পঙ্গু হাসপাতালে স্থানান্তরের নির্দেশ দেন। উনার চিকিৎসার সমস্ত ব্যয়ভার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই বহন করেন।
হারুনর রশীদ মুন্না ১৯৯৩ সালে তৎকালীন বৃহত্তর ডেমরা থানা আওয়ামীলীগের প্রথম যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন এবং আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবে অত্র এলাকায় নেতৃত্ব প্রদান শুরু করেন।
১৯৯৪ সালে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী মোহাম্মদ হানিফ সাহেবের নির্বাচনে বৃহত্তর ডেমরা থানার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন জাতীয় নেতা আব্দুর রাজ্জাক, তার সাথে ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব, তৎকালীন মহানগর আওয়ামী লীগের শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক সম্পাদক চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান, বৃহত্তর ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক সফর আলী, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হারুনর রশীদ মুন্না এবং সাংগঠনিক সম্পাদক এড. মোসলেহ উদ্দিন সাহেব। ভোট গ্রহণের দিন দায়িত্বরত নেতৃবৃন্দের ওপর তৎকালীন ৮৬ নং ওয়ার্ডের যাত্রাবাড়ী প্রাইমারি স্কুল কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আলাউদ্দিন কন্ট্রাকটরের পক্ষে অবস্থানকালীন সময়ে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী নবী উল্লাহ নবী তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে নেতৃবৃন্দের উপর সশস্ত্র হামলা করে। তাদের হামলায় আব্দুর রাজ্জাকের গাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিলো। নবী উল্লাহ নবীর সন্ত্রাসী বাহিনীর গুলিতে তৎকালীন মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মুজিবুর রহমান গুলিবিদ্ধ হন এবং হারুনর রশীদ মুন্নাগুরুতর আহত হন।
১৯৯৫ সালের ২৭ শে আগষ্ট বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ঘোষিত নির্বাচন কমিশন ঘেরাও কর্মসূচিতে ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হারুনর রশীদ মুন্না, তৎকালীন ৯০নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শরীফ মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক, ৯০নং ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি বদিরউদ্দিন বদুর নেতৃত্বে মিছিল নিয়ে কাওরান বাজার অতিক্রম করার সময় পুলিশ ও বিএনপি সন্ত্রাসীদের অতর্কিত হামলায় তাদের মিছিল ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় এবং ঐদিন রাতেই জানতে পারে তাদের সহযোদ্ধা বদিরউদ্দিন বদু সেখানে নিহত হন।
১৯৯৬ সালের ১৪ই ফেব্রুয়ারী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কর্তৃক বিএনপির প্রহসনের নির্বাচন বর্জন ঘোষণার পর রাতে হারুনর রশীদ মুন্নার নেতৃত্বে ধোলাইপাড় উচ্চ বিদ্যালয় ও ধোলাইপাড় সিও অফিস কেন্দ্র তালাবদ্ধ করা হয় এবং ১৫ই ফেব্রুয়ারী নির্বাচনের দিন বিএনপি সমর্থিত সংসদ সদস্য প্রার্থী সালাউদ্দিন আহম্মেদের গাড়ি ভাঙচুর করা হয় এবং এলাকা থেকে তাকে বিতাড়িত করা হয়। সেই ঘটনার পর বিএনপির নেতাকর্মীরা হারুনর রশীদ মুন্নাকে প্রধান আসামী করে মামলা দায়ের করে। তারপর জাতীয় নেতা রাজ্জাক সহ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের নির্দেশে বৃহত্তর ডেমরা থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক সফর আলী, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হারুনর রশীদ মুন্না এবং সাংগঠনিক সম্পাদক এড. মোসলেহ উদ্দিন সাহেব অত্র এলাকায় হাজার-হাজার নেতা-কর্মীদের নিয়ে গণ অবস্থান কর্মসূচী পালন করেন। পরবর্তীতে জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে তৎকালীন মেয়র মোহাম্মদ হানিফ সাহেবের নেতৃত্বে ২৩ শে মার্চ থেকে জনতার মঞ্চে আন্দোলন শুরু করেন এবং ৩০ শে মার্চ পর্যন্ত লাগাতার আন্দোলন অব্যাহত রাখেন। আন্দোলনের সময় বৃহত্তর ডেমরা থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক সফর আলীর নেতৃত্বে ডেমরা থানা আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে চেয়ারম্যান লুৎফর রহমানের অর্থায়নে এবং হারুনর রশীদ মুন্নার সার্বিক তত্ত্বাবধানে নেতাকর্মীদের জন্য প্রতিদিন খাদ্য ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহের ব্যবস্থা করেন।
আন্দোলন পরবর্তী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে ঢাকা-৪ আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী হাবিবুর রহমান মোল্লার পক্ষে হারুনর রশীদ মুন্না নির্বাচনী প্রচারনা করেন। ডেমরা থানা আওয়ামীলীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের সর্বাত্মক সহযোগিতায় হাবিবুর রহমান মোল্লাকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করা হয়।
২০০১ সালে নির্বাচনের পূর্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তৎকালীন বিএনপি-জামাতের নেতাকর্মীরা পুলিশ বাহিনীর সাহায্যে হারুনর রশিদ মুন্নার বাসভবনে হামলা চালায়। ২০০১ সালে নির্বাচনের দিন বিএনপি-জামাতের কর্মীরা প্রশাসনের সাহায্যে তাকে ধোলাইপাড় কেন্দ্র থেকে লাঞ্চিত করে বের করে দেয়। ২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পরাজয়ের পর বৃহত্তর ডেমরা এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা হন বেগম মতিয়া চৌধুরী। তার সহযোগী হিসেবে ছিলেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অবঃ) ফারুক খান, মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা মরহুম মনির হোসেন খান, বর্তমান ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান।
২০০২ সালে বেগম মতিয়া চৌধুরী দায়িত্ব গ্রহণের পর তাঁর নেতৃত্বে হারুনর রশীদ মুন্না তৎকালীন বৃহত্তর ডেমরার ১৫টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়নে আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী ও সংঘবদ্ধ করতে ব্যাপক কার্যক্রম পরিচালনা করেন। ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন সমূহে উঠান বৈঠক ও কর্মী সভায় স্থানীয়ভাবে নেতৃত্ব দেন তৎকালীন ডেমরা থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান মোল্লা ও ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনর রশিদ মুন্না।
উল্লেখ্য যে, ২০০২ সালে বিএনপি-জামাত পরিচালিত অপারেশন ক্লিনহার্টের সময় হারুনর রশীদ মুন্নাকে আটক করার উদ্দেশ্যে উনার বাসায় এসে উনার অনুপস্থিতে তার বৃদ্ধ পিতা মকবুল হোসেন বেপারীকে সেনাবাহিনী আটক করে নিয়ে যায় এবং পরবর্তী ৫ দিন পোস্তগোলা সেনা ক্যাম্পে আটক রেখে তার পিতার উপর অমানবিক নির্যাতন চালায়। এমতাবস্থায় এলাকার স্থানীয় গণ্য-মান্য ব্যক্তিদের সহায়তায় সেনাবাহিনীর বন্দীদশা থেকে হারুনর রশীদ মুন্নার বৃদ্ধ পিতাকে মুক্ত করা হয়।
২০০৪ সালের ১২ই ফেব্রুয়ারী আওয়ামী লীগের ডাকা হরতালে ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক হারুনর রশীদ মুন্না সহ আনুমানিক ১৬ থেকে ১৮ জন ভোরবেলা হরতাল চলাকালীন সময়ে মিছিল থেকে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয় এবং তৎকালীন ডেমরা থানার ওসি সালাম হারুনর রশীদ মুন্নাকে শারীরিক নির্যাতন করতে করতে থানায় নিয়ে যায় এবং থানায় নেয়ার পর গ্রেফতারকৃত সকলের উপর অমানবিক নির্যাতন চালায়। পরের দিন হারুনর রশীদ মুন্নাকে ২টি পেন্ডিং মিথ্যা হত্যা মামলা দিয়ে কোর্টে চালান দেয়া হয় এবং ২টি মামলায় উনার ১০ দিন রিমান্ড মঞ্জুর করে হাজতে প্রেরণ করা হয়, তারপরের দিন তাকে রিমান্ডের জন্য ডেমরা থানায় নিয়ে আসা হয়। ১০দিন রিমান্ডের অসহনীয় নির্যাতন শেষে তাকে জেলে প্রেরণ করা হয়। জেলে যাওয়ার পর তিনি জানতে পারেন শ্যামপুর এবং সূত্রাপুর থানায় ২টি করে আরও ৪টি পেন্ডিং হত্যা মামলায় উনাকে আসামী করা হয়েছে। তার আড়াই মাস পর উনার জামিন মঞ্জুর হয়। জেল থেকে বের হওয়ার সময় ডেমরা থানা পুলিশ উনাকে জেলগেট থেকে পুনঃরায় গ্রেফতার করে থানায় সোপর্দ করে। থানায় আসার পর উনি জানতে পারেন ডেমরা, শ্যামপুর ও সূত্রাপুর থানায় বিভিন্ন অপরাধের পেন্ডিং মামলায় উনাকে আবারও আসামী করা হয়েছে। যেখানে হত্যা মামলা হতে শুরু করে ভাঙ্গচুর, ছিনতাই এমনকি চুরির মামলাও উল্লেখিত। তারপর তাকে আবার কোর্টে চালান করে রিমান্ড মঞ্জুর করে। এভাবে হারুনর রশীদ মুন্নাকে ৩ থানার বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে মোট ৩৩ দিন রিমান্ডে অসহনীয় নির্যাতনের শিকার হতে হয় এবং সর্বমোট ৯ মাস কারাভোগ করতে হয়। উল্লেখিত, এই ৯ মাসে ৪বার উনার জামিন মঞ্জুর হয়। কিন্তু প্রতিবারই জেলগেট থেকে তাকে গ্রেফতার করে বিভিন্ন মামলায় আসামী করা হয়। এভাবে তাকে ৬৪টি মিথ্যা মামলার আসামী করা হয়েছিল। তখন তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সাবেক আইন মন্ত্রী এবং বিজ্ঞ আইনজীবী এড. আব্দুল মতিন খসরু সাহেবের সহায়তায় হাইকোর্টের নির্দেশে উনি মুক্তি পান এবং হাইকোর্ট থেকে রুল জারি করা হয় যে, ওয়ারেন্ট ব্যতিত হারুনর রশীদ মুন্নাকে পুনঃরায় গ্রেফতার করা যাবে না।
হারুনর রশীদ মুন্না বিবাহের ২ মাস ১৭ দিন পরে গ্রেফতার হয় এবং কারা মুক্তির পরে উনি তার নবজাতক পুত্র সন্তান আলভীকে দেখতে পান।
১/১১ তে দলের জন্য হারুনর রশীদ মুন্নার ভুমিকা ঢাকা মহানগরের রাজপথে অনস্বীকার্য। দলের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভ্যানগার্ড হিসাবে ঢাকা-৫ আসনের রাজপথে মুন্না ছিলেন নিবেদিত প্রাণ। দীর্ঘ দিন কারাবরণ করে, দলের দুঃস্বময়ে রাজপথে আওয়ামি লীগের রাজনীতির জন্য অতন্দ্র প্রহরির মত ছিলেন সক্রিয়।
২০০৭ সালের ১৬ ই জুলাই তত্বাবধায়ক সরকারের আমলে শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে হারুনর রশিদ মুন্না যাত্রাবাড়ী-সায়াদাবাদ এলাকায় ব্যাপক ভাংচুর ও প্রতিবাদ, প্রতিরোধ বলয় তৈরী করেন। সে কারনে হারুনর রশিদ মুন্নার বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা হয়। গ্রেপ্তারি হুলিয়া মামলা মাথায় নিয়েও শেখ হাসিনার মুক্তির জন্য ২,৯৮,৭৭০ টি গনস্বাক্ষর সংগ্রহ করে দলীয় কার্যালয়ে মহানগর দপ্তর সম্পাদক কুদ্দুস জমা দেন।
এরপর ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে প্রবীণ ডেমরা থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব হাবিবুর রহমান মোল্লা যখন কারাগারে তখন জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আম
হারুনর রশিদ মুন্না কে মনোনয়ন দিলেও তিনি নির্বাচন করতে পিছপা হন কারণ বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব হাবিবুর রহমান মোল্লা তার রাজনৈতিক জীবনের বিশ্বস্ত সহযোদ্ধা এবং বড় ভাই ছিলেন। তৎকালীন সময়ে এমপি হাবিবুর রহমান মোল্লা যখন কারাবন্দি ছিলেন জেলে থাকা অবস্থায় তাকে সংসদ সদস্য করার পিছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা ছিল হারুনর রশীদ মুন্নার। ২০১৪ এবং ২০১৮ এর জাতীয় নির্বাচনে ঢাকা-০৫ আসনের মরহুম সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্বব হাবিবুর রহমান মোল্লাকে জয়যুক্তত করার পিছনে হারুনর মুন্নার অবদান অনস্বীকার্য ছিল।
এরপর সাবেক এমপি হাবিবুর রহমান মোল্লার মৃত্যুর পর ঢাকা-০৫ আসনের শূন্যস্থান পূরণের জন্য যাত্রাবাড়ী থানার আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী মনিরুল ইসলাম মনুকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা-০৫ সংসদ নির্বাচনে নৌকার মাঝি হিসাবে মনোনয়ন দিলে ঢাকা-৫ সংসদীয় আসনের নির্বাচনে, ১৪ দলের প্রধান সমন্বয়ক দায়িত্ব নিয়ে হারুনর রশীদ মুন্না নৌকার মাঝি বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী মনিরুল ইসলাম মনু এমপিকে জয়যুক্ত করেন। কিন্তু স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি বিএনপি-জামাত জোট হেফাজত সর্বসময় চাচ্ছে দেশটাকে জঙ্গিবাদের একটি রাষ্ট্র হিসেবে কায়েম করতে। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের এই পথ চলায় এখনো স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তিকে ঘায়েল করতে রোদ বৃষ্টি ঝড় এর মাঝেও ঢাকা-৫ আসনের রাজপথের পথ চলতে তৃনমূল আওয়ামী লীগের কর্মীদের প্রাণভোমরা হয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকারের জন্য যে কোনো ত্যাগ স্বীকার করতে কার্পণ্য বোধ করেন না হারুনর রশীদ মুন্না।
প্রতিনিধি সরোজমিনে ঢাকা-৫ তৃণমূল আওয়ামী লীগের কর্মীদের মাধ্যমে জানতে পারেন, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং পূর্ণ ১টি নির্বাচন। রাজধানী ঢাকার মূল প্রাণকেন্দ্র, বিভিন্ন বিভাগ থেকে ঢোকার জন্য যে প্রবেশদ্বার সেটি হল যাত্রাবাড়ী। আগামী সংসদ নির্বাচনে এই আসনটি বরাবরের মতোই একটি গুরুত্বপূর্ণ আসন। এই আসনের আওয়ামী লীগের তৃণমূল কর্মী, সাধারণ জনগণের দাবি একজন পরীক্ষিত ত্যাগি আওয়ামী লীগ নেতাকে এই আসনের এমপি হিসেবে চায়। সে দিক থেকে হারুনর রশীদ মুন্নার আওয়ামী লীগের জন্য দীর্ঘ বছরের পরিশ্রম এবং ঢাকা-৫ কে একটি মজবুত শক্তিশালী সংসদীয় আসন হিসেবে গড়ে তুলতে হারুনর রশিদ মুন্নার বিকল্প নেই বলে জানান তৃণমূল কর্মীরা।
ঢাকা-৫ তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আরো জানান, সুখে দুঃখে আমরা হারুনর রশীদ মুন্না ভাইকে কাছে পাই। বিএনপি জামাত অপশক্তি যখনই মাথাচাড়া দিয়ে উঠে রাজপথে তখন একজনকেই সকল বাধা-বিপত্তি, পরিবারের মায়া তুচ্ছ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য জীবন দিতেও প্রস্তুত এক সংগ্রামী নেতা হারুনর রশিদ মুন্না ভাইকে আমরা কাছে পাই। আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জননেতা হারুনর রশীদ মুন্না ভাই কে নৌকার মনোনীত এমপি হিসেবে পেতে চাই।
ঢাকা-৫ সংসদীয় আসনের সাধারণ জনগণের কাছ থেকে হারুনর রশীদ মুন্না সম্পর্কে জানা যায়, হারুনর রশীদ মুন্না অত্যন্ত সাদা মনের একজন ব্যক্তি। স্কুল, মসজিদ, মাদ্রাসার উন্নয়নে তিনি অতন্দ্র প্রহরী। ঢাকা-৫ আসনের দুঃখী ও দরিদ্র মানুষের পাশে তিনি সর্ব সময় পাশে ছিলেন এমনকি এই করোনা দুর্যোগের সময়ও তিনি নেত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী অসহায় কর্মহীনদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছেন, বর্তমানে যাত্রাবাড়ি থানা আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করার লক্ষ্যে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। শীতে কম্বল বিতরণ কিংবা রমজানের সময় অসহায় দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ এর জন্য প্রতিটি ওয়ার্ডে তিনি গিয়েছেন, বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিও অব্যাহত রেখেছেন। আমরা এই নেতাকে আগামী সংসদ নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়যুক্ত করে এই আসনের উন্নয়নের সেবক হিসেবে পেতে চাই।
৮ ই জুলাই বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশন ডিবিসি ইলেকশন এর বিশেষ সাক্ষাৎকারে হারুনর রশীদ মুন্না প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের কথা তুলে ধরেন। এ সময় ঢাকা-৫ এর প্রায় দুই সহস্রাধিক আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীবৃন্দ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের স্লোগান এবং ঢাকা-৫ নৌকার মনোনীত এমপি পদপ্রার্থী হিসেবে হারুনর রশীদ মুন্নাকে চাই দাবিতে বাঁধভাঙ্গা জোয়ারের সৃষ্টি করে।
এর আগেও ঢাকা-৫ এর ১৪ টি ওয়ার্ডে হারুনর রশীদ মুন্নার নির্দেশে আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের চিত্রসম্বলিত লিফলেট বিতরণ করে নৌকায় ভোট দেওয়ার জন্য সাধারণ জনগণের দ্বারে দ্বারে পৌঁছান ঢাকা-৫ তৃণমূল আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীবৃন্দ।
Leave a Reply